
স্টাফ রিপোর্টার : ঢাকার সাভার উপেজেলার তেঁতুলঝোড়া ইউনিয়নের যাদুরচর এলাকার বাসিন্দা তাসেক সরকার করোনায় নিরাময়ে ভেষজ ওষুধ আবিস্কারের দাবী করেছেন। তার ভেষজ ওষুধ প্রায় ২শ’ করোনা আক্রান্ত রোগী খেয়েছেন। তারা এ ভেষজ ওষুধ খেয়ে সকলেই মুক্তি লাভ করেছেন বলে তিনি দাবি করেছেন। তার তৈরি ওষুধের উপকরণের মধ্যে রয়েছে তুলশী পাতা, থানকুনী পাতা, আদা রসুনসহ নানা লতা-পাতা আর মসলার সমন্বয়।
বাংলাদেশী বংশদ্ভোভূত বিট্রিশ নাগরিক তাসেক সরকারের বাড়ি সাভার উপজেলার হেমায়েতপুর এলাকায়। হেমায়েতপুর চক্ষু হাসপাতালের সাথের তৃতীয় তলা বাড়ি কাশেম মঞ্জিল। এ বাড়িটি তার প্রায়ত পিতা আবুল কাশেম তৈরি করেছিলেন। বাড়িটি একসময়ে ঐ এলাকার ঐতিহ্যের ধারক ছিলো। তখন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কে চলাচলরত প্রায় প্রত্যেক যাত্রীরই দৃষ্টি আকর্ষণ করতো কাশেম মঞ্জিল। বর্তমানে এ বাড়িতেই বসবাস করছেন তাসেক সরকার।
তাসেক সরকার কয়েক বছর হয় দেশে অবস্থান করছেন। করোনা পরিস্থিতির শুরুতেই ভাইরাসটি দমনে ভেষজ ওষুধ নিয়ে নিজস্ব গবেষণা শুরু করেন তিনি। ছোট বয়সে দাদী, নানীকে নানা রোগে ভেষজ ওষুধ খেতে দেখে এ ওষুধের প্রতি তার বেশ আগ্রহ ও কৌতুহল ছিল। দীর্ঘ আগ্রহ ও গবেষণার প্রথম প্রয়োগ করেন তারই এক প্রতিবেশী যাদুরচরের মধুরচর মহল্লার বাসিন্দা লালমিয়াকে দিয়ে। লালমিয়া ছিলেন করোনা পজেটিভ। তিনি অন্য সব ওষুধ বাদ দিয়ে তাসেক সরকারের দেয়া ভেষজ ওষুধ ৩দিন সেবন করেন। কৃষক লালমিয়ার দাবি তিনি এ ভেষজ ওষুধ খেয়ে আরোগ্য লাভ করেন। এরপর থেকে তাসেকের এ ভেষজ ওষুধের খবরাখবর এবং গুণাগুণ চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে।
এরআগে সর্ব প্রথম গত ১১ই জুন ফেসবুকে আবিস্কারের কথা ঘোষনা দেয়ার পরই রোগীদের তার কাছে থেকে ভেষজ ঔষধ গ্রহন ও সেবন শুরু হয়।
তাসেক সরকারের দাবি, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক, শহীদ সোহরাওয়ার্দ্দী হাসপাতালের চিকিৎসকসহ বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষ সেবন করছেন তার এ ভেষজ ওষুধ।
তিনি আরও জানান, ইন্টারনেট ও বই পুস্তক ঘেটে এবং গবেষণার ফসল তার এ ভেষজ ওষুধ। নানা গুণে ভরপুর বিভিন্ন ধরনের ১৬টি মসলা ও উপাদানে তৈরী এ ওষুধ। এ পর্যন্ত করোনা পজেটিভ ও উপসর্গ নিয়ে প্রায় দু’শত ব্যক্তি তার ওষুধ সেবন করে ভাল ফলাফল পেয়েছেন।
করোনা পজেটিভ কৃষক লালমিয়া জানান সর্দি, কাশি, জ্বর, গলা ব্যাথ্যাসহ নানা উপসর্গ নিয়ে তিনি নমুনা প্রদান করেন। পরীক্ষায় তার শরীরে করোনা ভাইরাস পজেটিভ হলে তাসেক সরকার তার বাড়ীতে হাজির হন এবং ৩দিনের ভেষজ ওষধ সেবন করতে বললে তিনি রাজী হন। দুই দিনেই তিনি অনেকটা সুস্থতা অনুভব করেন। ৩/৪ দিনে তিনি বেশ সুস্থ্যতায় ফিরে আসেন।
রাজধানীর মোহাম্মদপুরের শেরশাহসুরী রোডের বাসিন্দা মাসুম রহমান জানান, তিনি করোনা পজেটিভ হওয়ার পর সরকার তাসেকের দেয়া ওষুধ সেবন করে ভাল হয়েছেন। একই কথা জানালেন রাজধানী শহরের ফার্ম গেইট রাজাবাজারের বাসিন্দা লিফট ব্যবসায়ি মাসুদ দর্পণ। তিনি জানান, ভেষধ ওষুধের খবর পেয়ে তাসেক সরকারের বাড়ীতে গিয়ে ওষুধ নিয়ে সেবন করে আরোগ্য লাভ করি।
সাভার পৌর এলাকার স্মরণিকা আবাসিক এলাকার বাসিন্দা প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক ৯৩ বছর বয়সী আবুল কাসেম ভুইয়া করোনা পজেটিভ ছিলেন। তিনি তাসেক সরকারের ওষুধ সেবন করেন। করোনা রোগীদের জন্য সরকার তাসেকের ভেষজ ওষুধটি বেশ কার্যকর বলে জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, এন্টিবায়োটিকের কারণে করোনায় মৃত্যুর হার কম হলেও ভাইরাসটি ফুসফুসকে ক্ষতিগ্রস্ত করে চলে গেছে, দ্বিতীয় বার আবার আক্রমণ করলে শরীরে আর এন্টিবায়োটিক কাজ না করার সম্ভাবনা রয়েছে।সর্বদা সুস্স্থ্য থাকতে চাইলে ভেষজ ঔষধ সেবনের কোন বিকল্প নেই।
তিনি এক সিরাপেই করোনা, ম্যালেরিয়া, ডেংগু, চিকন গুনিয়া টাইফয়েড বা সাধারন জ্বর কাশির রোগীকে একই ভেষজ ঔষধ সেবন করতে দেন। ৩দিনের ঔষধ দেয়ার আগেই রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ্য হয়ে উঠেন।
সাভার প্রেস ক্লাবের সভাপতি নাজমূস সাকিব ও করোনা পজেটিভ ছিল, তিনি ও এই ঔষধ সেবনে আরোগ্য লাভ করেন।
তিনি ভবিষ্যতে তার এ ওষুধ নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে যেতে চান। আপাতত ওষুধের তিনি মূল্য গ্রহণ করেন না। তবে খরচ হিসেবে ওষুধ গ্রহিতা হাদিয়া স্বরূপ কিছু টাকা দিলে তিনি তা নেন। তিনি আরও জানান, এ মুহুর্তে কাঁচামাল সরবরা্হ কম তাই তিনি সবাইকে ওষুধ দিতে পারছেন না।