জানুয়ারি ১৩, ২০২৫


করোনাকালে অতিরিক্ত ভিটামিন ‘সি’ গ্রহণের ক্ষতিকর প্রভাব

করোনাকালে অতিরিক্ত ভিটামিন ‘সি’ গ্রহণের ক্ষতিকর প্রভাব

অনলাইন ডেস্ক: আমাদের দেহ স্বাভাবিক রাখতে প্রতিদিন সঠিক মাত্রায় ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ গ্রহণ করা অত্যাবশ্যকীয়। তেমনি যেকোনো ধরনের ভিটামিন অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে।

সবমিলিয়ে ১৩ প্রকারের ভিটামিন রয়েছে। যেগুলো মানবদেহের পুষ্টি সাধন, স্বাভাবিক বৃদ্ধি, বিকাশে ভূমিকা রাখে। এর মধ্যে ভিটামিন ‘সি’ অন্যতম।ভিটামিন ‘সি’ পানিতে দ্রবণীয়। এটি মুখ, খাদ্যনালি, পেট ও স্তনের ক্যান্সার থেকে সুরক্ষা দেয়। চোখে ছানি পড়াও রোধ করে।

তবে সাম্প্রতিক সময়ে করোনাভাইরাসের প্রকোপে সবাই ভিটামিন ‘সি’-এর দিকে ঝুঁকছেন। বিশেষজ্ঞরাও করোনা প্রতিরোধে বেশি বেশি ভিটামিন ‘সি’ জাতীয় খাদ্যগ্রহণের পরামর্শ দিচ্ছেন। এমনকি মানুষের মধ্যে ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত বিভিন্ন ধরনের ট্যাবলেট সেবনের মাত্রাও বেড়েছে।

যেহেতু ভিটামিন ‘সি’ পুরোপুরি পানি-দ্রবণীয়, ফলে অতিরিক্ত গ্রহণ করলে তা প্রস্রাবের সাথে বেরিয়ে যায়। প্রাকৃতিক খাবারে কম মাত্রায় ভিটামিন ‘সি’ থাকে। তবে যখন আপনি ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত ট্যাবলেট খাবেন, তাতে অতিরিক্ত মাত্রা থাকতে পারে।

#অতিরিক্ত ভিটামিন ‘সি’ গ্রহণের নেতিবাচক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

ভিটামিন ‘সি’ গ্রহণের ক্ষেত্রে দেখা যায় যে- কখনই পুরো অংশ মানব শরীর শোষণ করতে পারে না। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন- কম মাত্রার ডোজে ৭০/৯০ শতাংশ শোষণ করে। আর মেগা ডোজের ক্ষেত্রে ৫০ ভাগের কিছুটা বেশি। ফলে শরীরের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টিনাল ট্রাক্ট সিস্টেমে বড়সড় ব্যাঘাত ঘটতে পারে। ঠিক তখনই কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।

লক্ষণগুলো হলো-

১. ডায়রিয়া

২. বমি বমি ভাব

৩. অম্বল

৪. মাথা ব্যথা

৫. অনিদ্রা

#অন্যান্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া:

১. কিডনিতে পাথর

২. শরীরের অন্য পুষ্টি শোষণ

৩. হাড় ক্ষয়

এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল গবেষক তাদের সমীক্ষায় দেখিয়েছেন- যারা প্রতিদিন অন্তত ১০০ মিলিগ্রাম ও তার বেশি ভিটামিন সি গ্রহণ করেন, তাদের শরীরের ভেতরে এক ধরনের মরিচা ধরে। লোহাতে যেমন মরিচা ধরার পর অক্সিজেন ও পানির সংস্পর্শে খসে পড়ে, তেমনি অতিরিক্ত ভিটামিন সি গ্রহণের ফলে মানুষের দেহে সৃষ্ট মরিচাও একসময় খসে পড়তে পারে। তখন শরীরে বড়সড় রোগ দেখা দিতে পারে।

#দিনে কতটুকু ভিটামিন ‘সি’ গ্রহণ করা উচিত?

১. প্রাপ্তবয়স্ক নারী: ৭৫ মাইক্রোগ্রাম।

২. প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ: ৯০ মাইক্রোগ্রাম।

৩. শিশু-কিশোর: ১৫-৭৫ মাইক্রোগ্রাম।

৪. গর্ভবতী/ স্তন্যদাত্রী: ৮৫-১২০ মাইক্রোগ্রাম।

দেহে ভিটামিন ‘সি’–এর চাহিদা পূরণে প্রতিদিন টক জাতীয় ফল, গোলমরিচ, পেঁপে, আমলকি, সবুজ শাকসবজি নিয়মিত খেতে হবে। প্রাকৃতিক খাবার থেকে ভিটামিন ‘সি’ এর ঘাটতি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ‘সি’ যুক্ত ট্যাবলেট সেবন করা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র: এনডিটিভি

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *