জানুয়ারি ১৩, ২০২৫


খাতুনগঞ্জে মসলার দাম স্বাভাবিক খুচরা বাজারে আগুন

খাতুনগঞ্জে মসলার দাম স্বাভাবিক খুচরা বাজারে আগুন

অনলাইন ডেস্ক:কোরবানি ঈদ এলেই বাজারে বেড়ে যায় যাবতীয় মসলার দাম। অতিরিক্ত চাহিদাকে পুঁজি করে পাইকারি ও খুচরা বাজারে এই ভোগ্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয় ইচ্ছামতো। বরাবরের মতো এবারও মরিচ, হলুদ, জিরা, গোল মরিচসহ সবধরনের পণ্যের দাম খুচরা বাজারে ১০০ থেকে দেড়শ’ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে। তবে দেশের সবচেয়ে বড় ভোগ্যপণ্যের পাইকারি বাজার চট্টগ্রামের চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে দেখা যায়, সব ধরনের মসলাজাতীয় পণ্যের আছে পর্যাপ্ত মজুত। আগের মতো এবার বাড়ানো হয়নি দাম।
সরজমিন নগরীর কয়েকটি মুদি দোকানে গিয়ে দেখা যায়, গত মাসের শেষের দিকের ৪০ টাকার পিয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে। ১৩০ টাকার রসুন বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, শুকনা মরিচের কেজি ছিল ১৫০ থেকে ২০০ টাকা। এখন তা বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৪০ টাকায়।হলুদের দাম আগে কেজিতে ছিল ১৫০ থেকে ১৭০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৪০ টাকা। জিরা আগে ছিল ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা। এখন বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা। ১০০ টাকার প্রতি কেজি দেশি আদা এখন ২০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। আগের ১৫০ টাকার বিদেশি আদা এখন বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকা। ৪০০ টাকার দারুচিনি এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকায়। সব ধরনের মসলার দাম অস্বাভাবিক বেড়ে যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে নগরীর মুরাদপুরের মুদি দোকান ভাই ভাই স্টোরের মালিক নেজাম উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের করার কিছুই নেই। চাক্তাই-খাতুনগঞ্জে দাম বেড়ে গেছে। তাই আমাদেরও দাম বাড়াতে হয়েছে। যে দামে কিনে আনি, তার সঙ্গে পরিবহন ও লেবার খরচ বাদ দিয়ে সামান্য লাভে আমরা বিক্রি করছি। সেখানে দাম কমিয়ে দিলে আমরাও কমিয়ে দেবো।’
তবে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দাম বাড়ানো তো দূরের কথা উল্টো ক্রেতা সংকটে ভুগছেন খাতুনগঞ্জের ব্যবসায়ীরা। খাতুনগঞ্জে পিয়াজের পাইকারি দর কেজি ৩৫ টাকা, রসুন ১২০ টাকা, ভারতীয় মরিচ ১৭৫ টাকা, হাটহাজারীর মরিচ ২০৫ টাকা, মিষ্টি জিরা ১২২ টাকা, ভারতীয় জিরা ২৬৫ টাকা, ভারতের কেরালার আদা ১২০ টাকা, এলাচ ১ হাজার ৯২০ টাকা, দেশি হলুদ কেজি ১০২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খাতুনগঞ্জের মোহাম্মদিয়া স্টোরের মালিক আবুল কাশেম বলেন, বাজারে কোনো মসলার দাম বাড়েনি। সবকিছু আগের মতো আছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা আমাদের নাম দিয়ে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দিলে তো কিছুই করার নেই।
খাতুনগঞ্জ আড়তদার সাধারণ ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মানবজমিনকে বলেন, বাজারে কোনো মসলার দাম বাড়েনি। সবকিছু আগের মতো আছে। বরং ক্রেতা না পাওয়ায় আমদানিকারকরা হা-হুতাশ করছেন। পণ্যের পর্যাপ্ত মজুত আছে। তাই কোরবানির আগের মতো মসলার দাম বাড়ার কোনো সুযোগ নেই।
এদিকে খুচরা বাজারে দাম বাড়ার বিষয়ে কনজ্যুমার এসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-র সহ-সভাপতি নাজের হোসাইন বলেন, ঈদ বা অন্য কোনো মৌসুম আসার আগেই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এবার কোরবানির মসলার দাম অস্বাভাবিক বাড়িয়ে দিয়েছে। এই বিষয়ে প্রশাসনকে কঠোর নজর দিতে হবে। পাশাপাশি জনসাধারণকেও একসঙ্গে অধিক পণ্য কেনার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *