মার্চ ২৯, ২০২৪


‘করোনা পরবর্তী শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েও ভাবা প্রয়োজন’

‘করোনা পরবর্তী শিক্ষাব্যবস্থা নিয়েও ভাবা প্রয়োজন’

অনলাইন ডেস্ক:অসমতার সমাজ ব্যবস্থা ভেঙে সমতার সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করতে হবে বলে মনে করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. মশিউর রহমান।

তিনি বলেন, ‘আমাদের রিডিস্ট্রিবিউট সিস্টেম প্রসারিত করা প্রয়োজন। এ কাজ প্রাতিষ্ঠানিকভাবে করতে হবে। আজকে পুঁজিবাদী সমাজ ব্যবস্থার সুবাদে একচেটিয়াভাবে একটি বড় শ্রেণি গড়ে উঠেছে। উচ্চ শ্রেণির মানুষের আয়ের মধ্যে নিম্ন আয়ের মানুষের অধিকার রয়েছে। এ জন্য রিডিস্ট্রিবিউশন জরুরি।’শনিবার সন্ধ্যায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ গ্রুপ আয়োজিত ‘ইন দ্য পারসুট অব ইকোনমিক রিকোভারি: বাজেট ২০২১-২২’ শীর্ষক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন উপাচার্য।

উপাচার্য বলেন, ‘যে দেশটির সৃষ্টিতে ৩০ লাখ মানুষ শহীদ হয়েছেন, ২ লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমহানি ঘটেছে, সে দেশ অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ হবে- এটাই স্বাভাবিক। বরং আমাদেরকে যদি সামরিক শাসনের পথ পারি দিতে না হতো; আমরা যদি বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচিতে থাকতে পারতাম, তিনি যে শোষিতের গণতন্ত্রের কথা বলেছেন, সেটি করতে পারতাম, তাহলে মাত্র একদশকের মধ্যেই রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক দর্শনে পৃথিবীর বুকে বিস্ময় হতো বাংলাদেশ।’ করোনাকালীন শিক্ষাব্যবস্থার পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে উপাচার্য বলেন, ‘আমরা এখন করোনাকালীন শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করছি। পরিকল্পনা গ্রহণ করছি। কিন্তু করোনা পরবর্তী শিক্ষা ব্যবস্থা কী হবে, সেটি নিয়েও আমাদের ভাবতে হবে। সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে।’

সম্মানিত অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর প্রফেসর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘বর্তমানে আমরা একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। নানামুখী সংকটের মধ্যেও আমাদের বাজেটের সবচেয়ে বড় দিক হচ্ছে কৃষি। কৃষি আমাদের বাঁচিয়ে রেখেছে। গ্রামীণ অর্থনীতি আমাদের এই সংকটকালেও বাঁচিয়ে রেখেছে। শহরের অনেকে গ্রামে চলে গেছে। গ্রাম কিন্তু তাদের ফেরত দেয়নি। নন-ফরমাল ইকোনমি গ্রামে বাড়ছে। সেখানে কর্মহীনরা যুক্ত হচ্ছে। কিন্তু নগরে দারিদ্র বাড়ছে। একটি শক্তিশালী সামষ্টিক অর্থনীতি আছে বলেই আমরা টিকে আছি।’

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য ড. মীজানুর রহমান বলেন, ‘বিভিন্ন বৈষম্যের সঙ্গে বর্তমানে সাইবার পোভার্টি গ্যাপ তৈরি হচ্ছে। শহর আর গ্রামের মধ্যে বৈষম্য তৈরি হচ্ছে। সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য কমিয়ে আনতে হবে। বৈষম্যহীন সমাজের জন্য লড়াই করেছেন বঙ্গবন্ধু। টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে ঐক্যবদ্ধ জাতির বিকল্প নেই। বিভিন্ন দেশের উন্নয়ন বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখব যেখানে বিভাজন নেই, সেখানেই উন্নয়ন। আমাদের জনশক্তি বাড়ছে কিন্তু কর্মসংস্থান হচ্ছে না। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়কে ধন্যবাদ তারা কর্মমুখী শিক্ষার দিকে মনযোগ দিচ্ছেন। এটা খুবই জরুরি। কারণ কর্মসংস্থানের জন্য কর্মমুখী শিক্ষার বিকল্প নেই।’

ওয়েবিনারে মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং ফিন্যান্স করপোরেশনের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. সেলিম উদ্দিন। তিনি বাজেটের সার্বিক দিক তুলে ধরে বলেন, ‘বাংলাদেশ বহির্বিশ্বে এর মর্যাদা বৃদ্ধিতে সক্ষম হচ্ছে। কেননা আমাদের অর্থনৈতিক ভীত এখন অতীতের তুলনায় অনেক মজবুত।’

বিজনেস স্টাডিজ গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. ফকির রফিকুল আলমের সভাপতিত্বে ওয়েবিনারে স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকোত্তর শিক্ষা প্রশিক্ষণ ও গবেষণা কেন্দ্রের ডিন প্রফেসর ড. মো. আনোয়ার হোসেন।

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *