মার্চ ২৯, ২০২৪


কোরিয়ান ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’

কোরিয়ান ভাষায় বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’

অনলাইন ডেস্ক: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের অংশ হিসেবে সিউলস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস বঙ্গবন্ধুর ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’-প্রকাশনাটির কোরিয়ান ভাষায় অনুবাদের উদ্যোগ নেয়। তারই ধারাবাহিকতায়, সিউলের লোটে হোটেলে গত বৃহস্পতিবার অনুবাদকৃত প্রকাশনাটির মোড়ক উন্মোচন হয়। লি ডং-হিওন (Lee Dong-heon) এই প্রকাশনাটি কোরিয়ান ভাষায় অনুবাদ করেন যা কোরিয়ার প্রকাশনী সংস্থা মোরায়েল এলএলসির ব্যবস্থাপনায় অনলাইন প্ল্যাটফর্মে পাওয়া যাবে। এছাড়া দক্ষিণ কোরিয়ার স্থানীয় বইয়ের দোকান থেকে কেনা যাবে প্রকাশনাটি।

মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ. কে. আব্দুল মোমেন এমপি এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর মো. নজরুল ইসলাম খান দুইটি পৃথক ভিডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রী তার অভিনন্দন বার্তায় বলেন যে, বঙ্গবন্ধুর এই আত্মজীবনীতে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গির পাশাপাশি মানবতাবাদ ও বিশ্ব শান্তির প্রতি তার নিরবচ্ছিন্ন সমর্থন প্রতিফলিত হয়েছে।তিনি আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’-এর কোরিয়ান সংস্করণ দক্ষিণ কোরিয়ার বন্ধু ভাবাপন্ন জনগণকে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালির জীবন, তার সার্বজনীন দৃষ্টিভঙ্গি ও দর্শন এবং বাংলাদেশের সৃষ্টিতে তাঁর অসামান্য অবদান সম্পর্কে জানবার এক অনন্য সুযোগ সৃষ্টি করবে।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ কেবল মাত্র একটি আত্মজীবনী নয়, এটি বাংলাদেশের রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ইতিহাসের এক অনবদ্য দলিল। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে, বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনীর কোরিয়ান সংস্করণ কোরিয়ার জনগণকে দুই দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের অভিন্ন ইতিহাস সম্পর্কে ধারনা লাভ করতে সহায়তা করবে।

অনুষ্ঠানে দক্ষিণ কোরিয়ার জাতীয় সংসদের সদস্য সুল হো এবং দক্ষিণ কোরিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এশিয়া ও প্রশান্ত ব্যুরোর মহাপরিচালক লি স্যাংরেওল সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন।

সংসদ সদস্য সুল হো অভিনন্দনমূলক বক্তব্যে বলেন, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা ও নেতা হিসেবে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশি জনগণকে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি রক্ষা করতে এবং তাদের পূর্বপুরুষের ভূমিতে শান্তিতে বসবাসের সুযোগ করে দিয়েছিলেন। এছাড়া জাতির পিতা হিসেবে তিনি দেশকে পুনর্গঠন এবং গণতন্ত্র ও শান্তির উন্নয়নে অতুলনীয় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন।

তিনি বলেন, ‘আমাদের এখনও একটি অসম্পূর্ণ ইতিহাস রয়েছে তা হলো- দুই কোরিয়ার শান্তিপূর্ণ পুনর্মিলন। একটি জাতির ঐক্য অর্জনে কী ধরনের আত্মত্যাগ, প্রতিশ্রুতি এবং নেতৃত্বের প্রয়োজন হয়, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন এবং বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে আমাদের রাজনীতিবিদেরা তা জানতে পারবেন, যা তাদের অনুপ্রাণিত করবে।’

মহাপরিচালক লি স্যাংরেওল তার বক্তব্যে বঙ্গবন্ধুর বলিষ্ঠ, কূটনৈতিক ও ঐন্দ্রজালিক ব্যক্তিত্বের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুর অহিংস দৃষ্টিভঙ্গির বার্তা বিশ্বব্যাপী শান্তিকামী মানুষের বিশেষতঃ কোরিয়ান জনগণের হৃদয়ে অনুরণিত হবে যারা ইতিহাসে এ ধরণের বিভিন্ন ঘটনার সম্মুখীন হয়েছেন। অতঃপর তিনি দু’দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান দ্বিপাক্ষিক

সহযোগিতার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ২০১৯ সালে কোরিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লি-নাক-ইউন-এর বাংলাদেশ সফরের মধ্য দিয়ে এই সম্পর্ক আরো গতিশীলতা পেয়েছে, যেই সফরে তিনি একজন প্রতিনিধি হিসেবে অংশ নেন। রাষ্ট্রদূত আবিদা ইসলাম তাঁর স্বাগত বক্তব্যে গভীর শ্রদ্ধার সাথে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-কে স্মরণ করেন। সেইসাথে, তিনি ত্রিশ লক্ষ শহীদ এবং সকল বীর মুক্তিযোদ্ধাদের স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান।
অনুষ্ঠানে অতিথিদেরকে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র কোরিয়ান সংস্করণ উপহার হিসেবে দেয়া হয়। মোড়ক উন্মোচন অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত, কূটনীতিক, কোরিয়ান সরকারী ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি, নাগরিক সমাজের সদস্য, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রতিনিধিরা এবং সিউলে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশিরা উপস্থিত ছিলেন।

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *