এপ্রিল ২০, ২০২৪


ইউনিসেফ-ইউনেস্কোর আহ্বান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার

ইউনিসেফ-ইউনেস্কোর আহ্বান শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার

অনলাইন ডেস্ক: করোনাভাইরাসের কারণে দেড় বছরেরও বেশি সময় ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো খুলে দেয়ার আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শিশু বিষয়ক সংস্থা (ইউনিসেফ) এবং শিক্ষা, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি বিষয়ক সংস্থা (ইউনেস্কো)।

সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর এবং ইউনেস্কোর মহাপরিচালক অড্রে অ্যাজুল এই আহ্বান জানান। আগামী ১৩ জুলাই অনুষ্ঠেয় গ্লোবাল এডুকেশন মিটিং সামনে রেখে এই আহ্বান জানিয়েছেন দুই সংস্থার প্রধান। করোনা মহামারিতে দীর্ঘসময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় শিশুদের পড়াশুনা মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। সেজন্য টিকা ও সংক্রমণ শূন্যের কোটায় আনার অপেক্ষায় না থেকে দ্রুত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান জানায় সংস্থা দুটি।

২০১৯ সালের ডিসেম্বরের শেষ দিকে চীনের উহান শহরে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। এরপর ভাইরাসটি ছড়িয়ে পড়ে বিশ্বের দুই শতাধিক দেশ ও অঞ্চলে। বাংলাদেশেও গত বছরের ৮ মার্চ ধরা পড়ে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি। এর নয় দিন পর ১৭ মার্চ থেকে সারাদেশে সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে দফায় দফায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানো হয়েছে। সর্বশেষ ছুটির মেয়াদ ৩১ জুলাই পর্যন্ত বাড়ানো হয়।

বাংলাদেশ ছাড়াও বিভিন্ন বিভিন্ন দেশে দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন শিক্ষার্থীরা। এমন অবস্থায় সংক্রমণ কমে আসার অপেক্ষায় না থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার আহ্বান জানানো হয় ইউনিস্কো ও ইউনিসেফের পক্ষ থেকে।

যৌথ বিবৃতিতে জাতিসংঘের সংস্থা দুটি জানায়, স্কুলে যেতে না পারার কারণে শিশু ও তরুণ জনগোষ্ঠী যে ক্ষতির সম্মুখীন হবে, তা হয়তো কখনোই পুষিয়ে নেওয়া যাবে না। শেখার ক্ষতি, মানসিক সংকট, সহিংসতা ও নির্যাতনের সম্মুখীন হওয়া থেকে শুরু করে স্কুলভিত্তিক খাবার ও টিকা না পাওয়া বা সামাজিক দক্ষতার বিকাশ কমে যাওয়া ছাড়াও কম সুবিধা পাওয়া শিশুদের আরও বেশি ক্ষতি হচ্ছে।

যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়, করোনাভাইরাস সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর ১৮ মাস পেরিয়ে গেছে। লাখ লাখ শিশুর পড়াশোনা এখনও ব্যাহত হচ্ছে। এখন পর্যন্ত বিশ্বের ১৯টি দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। যে কারণে ১৫ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এভাবে চলতে পারে না।

সংক্রমণ সীমিত পর্যায়ে রাখার প্রচেষ্টায় এসব দেশের সরকার স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে এবং দীর্ঘকাল ধরে সেগুলো বন্ধই রেখেছে। এমনকি মহামারি পরিস্থিতি যখন ছিল না তখনও। স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত শেষে নেওয়ার বদলে প্রথমে নেওয়া হয়েছে। আবার স্কুল বন্ধ রাখা হলেও বার ও রেস্তোরাঁ ঠিকই খোলা ছিল।

সংস্থা দুটি আরও জানান, বাবা-মা এবং লালন-পালনকারীদেরও সমপরিমাণ ক্ষতির ভার বইতে হচ্ছে। শিশুদের ঘরে থাকা বিশ্বজুড়ে বাবা-মায়েদের বাধ্য করছে তাদের চাকরি ছেড়ে দিতে। বিশেষ করে এমন দেশগুলোতে, যেখানে পারিবারিক ছুটির নীতিমালা নেই বা সীমিত। এসব কারণেই ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হয়ে শিক্ষা গ্রহণের জন্য স্কুলগুলো পুনরায় চালু করার ক্ষেত্রে অপেক্ষা করা যায় না।

বিবৃতিতে আরও বলা হয়, সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর টিকা দেওয়ার জন্যও অপেক্ষা করা যায় না। সব স্কুলের উচিত দ্রুত সম্ভব ব্যক্তিগতভাবে স্কুলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে, সে ব্যবস্থা করা।

Related posts

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *